• সর্বশেষঃ

    আমি কেন আর্য সমাজ কে সমর্থন করি?


    এক আল্লাহ'র এবাদত; আল্লাহ-ই সৃষ্টিকর্তা, তিনি মাত্র একজন, আর কোন উপাস্য নেই; এই আগ্রাসী ইসলামিক তত্ত্বের সামনে, মুখোমুখি দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারে; এবং যোগ্য জবাব দিতে পারে একমাত্র আর্যসমাজ। কারণ পৌরাণিক ভাবধারায় আপনি যতই টানাহ্যাঁচড়া করেন না কেন সেখানে এক ঈশ্বর বাদের কোন অস্তিত্ব নেই। ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর তিন প্রধান ঈশ্বর তো আছেই, তার উপরে আছে ৩৩ কোটি দেবদেবী, আছে দশ অবতার, মূখ্য দশ অবতার ছাড়াও আরো অনেক অবতার আছে যেমন- রামকৃষ্ণ, অনুকূল, লোকনাথ(এরাও অবতার হিসাবে পূজ্য), এরপরেও মন্দিরে মন্দিরে জানা-অজানা নানান ব্যাক্তির পূজা তো আছেই। সর্বসাকুল্যে গাছ, বাঁশ, পাথর, মাটি, সাপ, গরু থেকে শুরু করে চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ, নক্ষত্র সবই হিন্দুদের উপাস্য। পৌরাণিক হিন্দুরা এতো কিছুর পূজা করেও সন্তুষ্ট হতে পারে নি, তাই তো তারা নানা মাজার পূজাও করে; মাজারে মাজারে ওরশ করে ছাগলের জান কোরবান করে। এইজন্যই যৌক্তিক কারণে স্বাভাবিকভাবেই ভিন্ন সম্প্রদায় লোক আমাদের কে ব্যাঙ্গ, বিদ্রুপ করে। নাস্তিক দার্শনিক আরজ আলী বলে গেছেন-
    “বিশেষত নিরাকার-উপাসক হইতে সাকার-উপাসকগণই অত্যাধিক কুসংস্কার আচ্ছন্ন। যদিও বেদ বিশেষভাবে পুতুল-পূজা শিক্ষা দেয় নাই, তথাপি পরবর্তীকালে পুরাণের শিক্ষার ফলে বৈদিক ধর্ম ঘোর পৌত্তলিকতায় পূর্ণ হইয়াছে।” 

    এখন শ্রীকৃষ্ণকে দেখিয়ে এক ঈশ্বরের উপাসনা দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু তাতেও একঈশ্বর বাদের কোন নাম গন্ধ নাই। শ্রীকৃষ্ণের পাশে থাকে রাধা, কোথাও থাকে অষ্টম সখি, তারপরে থাকে বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ এরা সবাই একই আসনে পূজিত হন। রাধাকে বাদ দিয়ে জেন কৃষ্ণের পূজা অসম্ভব! তাহলে এখানে এক ঈশ্বর বাদের চর্চা টা কোথায়? সবাই নিশ্চয় এই খিচুড়ির মার্কা ধর্মচর্চার গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসাবেন না। তাই স্বাভাবিক ভাবেই অনেক হিন্দু ইসলামের দিকে আকৃষ্ট হয়।

    কারণ ইসলাম বলে সৃষ্টিকর্তা মাত্র একজন, তিনি আল্লাহ; শুধুমাত্র আল্লাহর উপাসনা হতে পারে আর কারো নয়। ইসলামের এই তথাকথিত এক ঈশ্বর বাদের তত্ত্বে বিভ্রান্ত হয়ে যখন একজন হিন্দু স্বধর্ম ত্যাগ করে; তখন তাকে, প্রকৃত এক ঈশ্বর বাদ কি? তা বুঝাতে পারে একমাত্র আর্যসমাজ! শুধু ইসলাম কেন? আব্রাহামিক যত মতবাদ আছে সব গুলাকে শাণিত জাবাব দিতে পারে আর্যসমাজ। এই জন্য হিন্দু সমাজের প্রতি ঘরে ঘরে কথিত সব পণ্ডিত থাকলেও, জাকির নায়েকের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে কথা বলার জন্য লোক পাওয়া গেল মাত্র একজন, তিনি মহেন্দ্রপাল আর্য।

    বৈদিক ধর্ম ব্যাতিত অন্য কোন আব্রাহামিক মতবাদে প্রকৃতপক্ষে এক ঈশ্বর বাদের কোন বালাই নাই। মুসা কে বাদ দিলে ইহুদি মতবাদ নাই, যীশু কে বাদ দিলে খ্রিস্টান মতবাদ নাই, নবীকে বাদ দিলে ইসলাম নাই। মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ কে বাদ দিলে কোন কালেমা তাইয়্যেবা নাই। কিন্তু যদি শ্রীরাম, শ্রীকৃষ্ণ কে বাদ দি তবে বৈদিক ধর্মের এতোটুকুও কমতি হবে না। বৈদিক ধর্মে পরমাত্মার উপাসনা করার জন্য অবতার, ঈশ্বরপুত্র, বার্তাবাহক কোন বিশেষ ব্যক্তিবর্গ কে পূজা করার প্রয়োজন নাই; বা তাদের খুশি করার কোন দরকার নাই।

    আর্যসমাজ-ই একমাত্র সংঘটন যারা বিশুদ্ধভাবে “বেদ” এর প্রচার করে। অন্যরা প্রচার করে খিচুড়ি, বেদ কে সামনে রেখে এরা বেদ বিরুদ্ধ মতবাদ প্রচার করে। এগুলা এক একটা সংঘটন হচ্ছে, “বেদের মলাটে পুরাণ”। তাই ঐ সব সংঘটন এবং তাদের কুসংস্কারাচ্ছন্ন মতবাদ কে গ্রহণ না করে আর্যসমাজ কে সমর্থন করি। সকলে আর্যসমাজ সম্পর্কে জানুন, বৈদিক ধর্ম গ্রহণ করুন এবং নিজেদের আত্মবিনাশের পথ কে অবরুদ্ধ করুন।

    ইতি,
    একজন আর্য সমাজী


    ।।নমস্তে।।
    @ বৈদিক আর্য সমাজ