• সর্বশেষঃ

    পুরাণ সমীক্ষা ১ঃ সাত্ত্বিক দূর্গাপূজা কি আদৌ সম্ভব?


    কিছু বছর ধরেই দেখছি বিভিন্ন হিন্দু সংগঠন  সাত্ত্বিক দূর্গাপূজার জন্য প্রচারণা চালাচ্ছে। 

    দূর্গাপূজার সময় অনেক জায়গায় মদ খাওয়া হয়,  DJ Song প্লে করে নাচানাচি করা হয়। এগুলো তামসিক ক্রিয়া। পুরাণ অনুযায়ী তামসিক ক্রিয়া করলে তাকে নরকে যেতে হবে। পরকালের কাথা বাদই দিলাম। ইহ কালেই সমাজের বিশৃঙ্খলা তৈরী হয় এসব কারণে। তাই সকলেরই উচিৎ তামসিক এসব ক্রিয়া বন্ধ কারা। 

    আবার যেসব কাজ করলে লোভ লালসা বৃদ্ধি পায়, মন সকাম কর্মে আকৃষ্ট হয় সেসব কর্ম রাজসিক। তাই রাজসিক কর্মও পরিত্যাজ্য। ( রাজসিক আর তামসিক গুণের ভেতর তামসিক গুণ অধিক নিকৃষ্ট) 

    সম্ভবত এসব কারণেই এসব সংগঠন সাত্ত্বিক দূর্গাপূজার আহ্বান জানায়। তাদের ভাষায় - "শাস্ত্রানুমোদিত সাত্ত্বিক পূজা"। কিন্তু আসলেই কি – তারা যেগুলোকে শাস্ত্র বলে দাবি করে সেগুলোতে সাত্ত্বিক দূর্গাপূজার বিধান আছে? 

    এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা প্রয়োজন – দূর্গাপূজা হয় মূলত দেবী পুরাণ, কলিকা পুরাণ এবং বৃহন্নন্দিকেশ্বর পুরাণের যে কোনো একটিতে প্রদত্ত দেবী পূজার বিধি অনুসারে। এছাড়া, দেবী ভাগবত নামক একটি বৃহদাকার পুরাণ আছে। এখানে দূর্গার বিস্তারিত বর্ণনা পাওয়া যায়। আবার মার্কেণ্ডেয় পুরাণের অন্তর্গত চণ্ডী পাঠ প্রচলিত দূর্গা পূজায় বাধ্যতামূলক।  

    উপরোল্লিখিত পুরাণগুলির ভেতর কেবলমাত্র মার্কেণ্ডেয় পুরাণ ১৮ মহাপুরাণের অন্তর্গত। পদ্ম পুরাণে পুরাণ গুলির একটা শ্রেণীবিভাগ করা হয়েছে। সে অনুসারে মার্কেণ্ডেয় পুরাণ কোনো সাত্ত্বিক পুরাণ নয়। এটা একটা রাজসিক পুরাণ। রাজসিক পুরাণ দিয়ে কিভাবে আপনারা সাত্ত্বিক দূর্গাপূজা করবেন?  

    (রেফাঃ পদ্ম পুরাণ, উত্তর খণ্ড) 

    বাকি পুরাণগুলো উপপুরাণ। এসব উপপুরাণগুলোর যদি শ্রেণীবিভাগ করা হয় সবগুলোই রাজসিক বা তামসিক শ্রেণীভুক্ত হবে – পুরাণ গুলো পড়লেই বুঝতে পারবেন। কলিকা পুরাণের কথা না বললেই নয়।  এটাকে যেকোনো পণ্ডিতই তামসিক পুরাণের শ্রেণীতে ফেলবেন। তো এই সকল তামসিক আর রাজসিক পুরণ দিয়ে আপনারা কিভাবে সাত্ত্বিক দূর্গা পূজা করবেন? 

    পাঠা বলি দেবেন আর মাংস খাবেন। তারপরও বলবেন সাত্ত্বিক পূজা!  এর পর "সাত্ত্বিক বলি"  শব্দটাও শুনতে হয় কিনা সেই চিন্তায় আছি।


    আশাকরি পৌরাণিকগণ  যথাযথ উত্তর দেবেন। 


    ( যারা সাত্ত্বিক, রাজসিক, তামসিক এগুলো বোঝেন না তারা গীতার ১৪ অধ্যায়ের ৫ থেকে ১৬ নং শ্লোক পড়ুন)