• সর্বশেষঃ

    প্রশ্নঃ পরমেশ্বরের মূল ও সর্বোত্তম নাম কোনটি?


    উত্তরঃ "ওঁ" (ও৩ম্) — এই ওঙ্কার শব্দ পরমেশ্বরের সর্বশ্রেষ্ঠ নাম। এই একটি নাম হতে পরমেশ্বরের বাকি সকল নাম সূচিত হয়েছে। (তৈঃ আঃ প্রুপাঃ৭ অনুঃ ১)

    "ওঁ" - ই ব্রহ্ম। (যজুঃ ৪০/১৭)

    পরমাত্মাকে যখন অক্ষর দ্বারা প্রকাশ করা হয় তখন তিনি ওঙ্কার। ....... অ-কার, উ-কার, ম-কার এই তিনটি ওঙ্কারের মাত্রা।
    (অর্থাৎ, অ+উ+ম্ = ওঁ; এটি উচ্চরণের সময় ৩ মাত্রা হয় বিধায় " ও৩ম্" আকারেও লেখা হয়) (মাণ্ডুক্য ৮)

    যাহা কিছু অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ এই সবই ওঙ্কার; ত্রিকালের অতীত আর যা কিছু আছে তাহাও ওঙ্কার ( অর্থাৎ, সবই ওঙ্কারের অন্তর্ভুক্ত) । (মাণ্ডুক্য ১)

    যাহা ওঙ্কার বলিয়া প্রসিদ্ধ তাহাই ব্রহ্ম। (প্রশ্ন ৫/৭)

    সমস্ত কিছুই ব্রহ্মের (অর্থাৎ, ওঙ্কারের) অন্তর্গত (মাণ্ডুক্য ২)

    সমস্ত বেদ যে পদ প্রতিপাদন করে, সমস্ত তপস্যা যাঁহার উদ্দেশ্যে করা হয়, যাঁহাকে ইচ্ছা করিয়া সাধকগণ ব্রহ্মচর্য পালন করেন, সেই প্রাপ্তব্য বস্তুই ওঙ্কার (কঠ ১/২/১৫) 

    "ওঁ" - এই অক্ষরটিই সর্বগত ব্রহ্ম।(কঠ১/২/১৬)

    ওঙ্কার ব্রহ্মের প্রকৃষ্ট জ্ঞাপক। ( কঠ ১/২/১৭)

    ওঙ্কারই এই সমস্তকিছু। (ছান্দগ্য - ২/১৩/৩)

    পরমাত্মাকে "ওঁ" বলিয়া উপাসনা করিবে। (মুণ্ডক ২/২/৬)

    ওম্ এই অক্ষরই ব্রহ্ম ( ব্রহ্মের নাম)। এই সমস্তই ওঙ্কার। অর্থাৎ, ওঙ্কার দ্বারাই সমস্ত শব্দ-জগৎ পরিব্যাপ্ত।  ( তৈত্তেরীয় ১/৮/১)

    আশা করি বুঝতে পেরেছেন যে ঈশ্বরের মূল নাম "ওঁ" যা ওঙ্কার নামে পরিচিত। বাকি সকল নাম গৌণ।

    গৌণ নাম বলতে সে সকল নাম বোঝায় যে সকল  নামের পরমেশ্বর ছাড়াও অন্যান্য অর্থ হয়। স্বয়ং "ঈশ্বর/পরমেশ্বর" নামটিও সবসময় সর্বোচ্চ সত্তাকে বোঝায় না। নানা অর্থে এর ব্যবহার হতে পারে।

    ঈশ্বরের বহু নাম সম্পর্কে বেদে বলা হচ্ছে -  যিনি অনেক দেবগণের নাম ধারণ করেন কিন্তু এক ও অদ্বিতীয়, ভুবনের লোক তাকে জানতে ইচ্ছা করে। ( ঋক্ঃ ১০/৮২/৩)

    এক সত্তা পরব্রহ্মকে জ্ঞানীরা ইন্দ্র, মিত্র, বরুণ, অগ্নি, দিব্য, সুপর্ণ, গরুৎমান, যম, মাতরিশ্বা, আদি বহু নামে অভিহিত করেন। (ঋগ্বেদ ১/১৬৪/৪৬)

    তিনি এক ও সৎ(নিত্য), তাকেই বিপ্রগণ বিভিন্ন নাম দিয়ে থাকেন। তাকেই অগ্নি, যম, মাতরিশ্বা বলা হয়। (সুতরাং, ঈশ্বরের বিভিন্ন নাম থাকলেও তিনি আসলে একজনই) (ঋক্ - ১/১৬৪/৪৬)

    কিন্তু "ওঁ" দ্বারা ঐ সর্বোচ্চ সত্তাকেই বোঝায়। অন্য কিছুকে বোঝায় না। তাই এটিই ঈশ্বরের মূখ্য নাম। সবকিছুই এই "ওঁ" এর অন্তর্গত। আপনিও, আমিও।

    ।।নমস্তে।।