• সর্বশেষঃ

    বাল্যবিবাহঃ সনাতন ধর্ম অনুসারে মেয়েদের ১০ বছর বয়সের ভিতর বিয়ে দিতে হবে এই অপপ্রচারের জবাব।


    পরিহস্ত বি ধারয় যােনিং গর্ভায় ধাতবে।
    মর্যাদে পুত্রমা ধেহি তং ত্বমা গময়াগমে ॥ 

    পদার্থঃ (পরিহস্ত) হে শক্তির আশ্রয়দাতা পুরুষ! (গর্ভায় ধাতবে) গর্ভের পুষ্টির জন্য (যােনিম্) স্ত্রী যােনিকে (বি ধারয়) বিশেষ রূপে রক্ষা কর (মর্যাদে)- হে মর্যাদা যুক্ত পত্নী! (পুত্রম্‌) গর্ভস্থ সন্তানকে (আধেহি) বিশেষভাবে পুষ্ট কর (ত্বম্‌) তুমি (তম্‌) সেই সন্তানকে (আগমে) যােগ্য সময়ে (আগময়) উৎপন্ন কর। (অথৰ্ব্ববেদ ৬/৮১/২)

    বঙ্গানুবাদঃ হে শক্তিধর পুরুষ! গর্ভের পুষ্টির জন্য স্ত্রী যােনিকে বিশেষরূপে রক্ষা কর। হে মর্যাদা ময়ী পত্নী! গর্ভস্থ সন্তানকে বিশেষ ভাবে পুষ্ট কর। তুমি সেই সন্তানকে উপযুক্ত সময়ে প্রসব কর।


    ##################################

    যাসাং দ্যৌঃ পিতা পৃথিবী মাতা সমুদ্ৰো মুলং বীরুধা বভূব।
    তাস্ত্বা পুত্রবিদ্যায় দৈবীঃ প্রাবন্ত্বোষধয়ঃ ॥ 

    পদার্থঃ হে স্ত্রী! (যাসাম্‌) যে (বীরুধাম্‌) ওষধি সমূহের (দৌঃ পিতা) দ্যুলােক পিতা (পৃথিবী মাতা) পৃথিবীলোক মাতা এবং (সমুদ্রঃ মূলম্) সমুদ্র লােক মূল আধার (বভুব) হইয়াছে (তাঃ) সেই ওষধি সমূহকে আমি তােমাকে (পুত্র-বিদ্যায়) সন্তান লাভের জন্য দান করিতেছি (দৈবীঃ) দিব্য গুণযুক্ত (ওষদয়ঃ) ওষধি সমূহ (প্র-অবন্তু) রক্ষা করুক। (অথৰ্ব্ববেদ ৩/২৩/৬)

    বঙ্গানুবাদঃ- হে স্ত্রী! যে ওষধি সমূহের দ্যুলােক পিতা, পৃথিবীলোক মাতা এবং সমুদ্র লােক মূল আধার সেই ওষধি সমূহ তােমাকে সন্তান লাভের জন্য দান করিতেছি। দিব্য গুণযুক্ত ওষধি সমূহ তােমাকে রক্ষা করুক।

    ##################################

     দশ মাসা  ঞ্ছশয়ানঃ কুমারাে অধি মাতরি।
    নিরৈতু জীবাে অক্ষতাে জীবাে জীবন্ত্যা অধি ॥ 

    পদার্থঃ (দশমাসান্‌) দশ মাস পর্যন্ত (অধি মাতরি) মাতার গর্ভে (শশয়ানঃ) সুপ্ত (কুমারঃ জীবঃ) সুকুমার জীব (জীবঃ) প্রাণ ধারণ করিয়া (জীবন্ত্যা অধি) জীবিত মাতা হইতে (অক্ষতঃ) বিনা ক্লেশে (নিরৈতু) বহির্গত হউক। (ঋগ্বেদ ৫/৭৮/৯)

    বঙ্গানুবাদঃ হে পরমাত্মন্ ! দশমাস পর্যন্ত মাতৃগর্ভে সুকুমার জীব সুপ্ত থাকিয়া যেন প্রাণ ধারণ করে এবং জীবিত মাতার গর্ভ হইতে যেন বিনা কষ্টে ভূমিষ্ঠ হয়।


    দেখুন!  বেদে কিভাবে মা ও শিশুর পুষ্টি ও নিরাপদ প্রসবের উপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।  এমনটি মানবসৃষ্ট কোন ধর্মগ্রন্থে আপনি খুজে পাবেন না। বেদ আমাদের এতো সুন্দর নির্দেশনা দেওয়া সত্ত্বেও দুঃখের সাথে বলতে হয় সনাতনীরা বেদে অনুসরণ না করে নানারকম স্মৃতিশাস্ত্র ও পুরাণাদিতে মজে আছে। এগুলোতে ধর্মের কথা থাকলেও যেহেতু ঋষিদের নিজেদের রচনা, বেদের মতো পরমাত্মা সাথে যুক্ত অবস্থায় ঋষিদের দ্বারা দৃষ্ট নয় সেহেতু এগুলোর বিধি বিধান সর্বকালের জন্য প্রযোজ্য নয়।  একমাত্র বেদই সর্বকালের জন্য প্রযোজ্য।

    এসব গ্রন্থ দ্বারা জীবণ পরিচালনা করতে গিয়েই সনাতনীদের আজ বেহাল অবস্থা।  আর এই বেহাল অবস্থা বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

    নিচের উদাহরণটি বিবেচনা করুন,



    বাল্যবিবাহ সমর্থক  – বিবাহের বয়স এবং রীতি কোনটি উত্তম?

    বৈদিক – ষােড়শ(১৬) বর্ষ হইতে চতুর্বিংশতি(২৪) বর্ষ পৰ্য্যন্ত কন্যার এবং পঞ্চবিংশতি(২৫) বর্ষ হইতে  অষ্টাচত্বারিংশৎ(৩৮) বর্ষ পর্যন্ত পুরুষের বিবাহের উত্তম বয়স। ষােড়শ(১৬) বৎসরের স্ত্রীর সহিত পঞ্চবিংশ(২৫) বৎসর বয়সে বিবাহ ‘নিকৃষ্ট'। অষ্টাদশ(১৮) অথবা বিংশ(২০) বৎসরের স্ত্রীর সহিত ত্রিংশ(৩০), পঞ্চত্রিংশ(৩৫) বা চত্বারিংশ(৩৪) বর্ষের পুরুষের বিবাহ 'মধ্যম’, চতুর্বিংশ(২৪) বর্ষের স্ত্রী এবং অষ্টাচত্বারিংশ(৩৮) বর্ষের পুরুষের বিবাহ 'উত্তম'। যে দেশের বিবাহবিধি এইরূপ উৎকৃষ্ট এবং যে দেশে ব্রহ্মচর্য্য ও বিদ্যাভ্যাস অধিক হয়, সেই দেশ সুখী এবং যে যে দেশে বাল্যাবস্থায় তথা অযােগ্যদের বিবাহ হয়, সেই দেশ দুঃখে নিমজ্জিত হয়। কেননা, ব্রহ্মচর্য্য ও বিদ্যাধ্যয়ন পূর্বক বিবাহের সংস্কার দ্বারাই সকল বিষয়ের সংস্কার এবং উহার বিকৃতি দ্বারাই সকল বিষয়ের বিকৃতি ঘটিয়া থাকে। (প্রমাণ পরে দেওয়া হয়েছে)

    বাল্যবিবাহ সমর্থক –
    অষ্টবর্ষা ভবেদ্‌ গৌরী নববর্ষা চ রােহিণী। 
    দশবর্ষা ভবেৎ কন্যা তত উৰ্দ্ধং রজস্বলা ॥১॥ 
    মাতা চৈব পিতা তস্যা জ্যেষ্ঠে ভ্রাতা তথৈব চ। 
    এয়স্তে নরকং য়ান্তি দৃষ্টা কন্যাং রজস্বলাম্ ॥২॥

    এই শ্লোক পারাশরী এবং শীঘ্রবােধে লিখিত আছে। ইহার অর্থ এই যে,
    কন্যার অষ্টম বর্ষে গৌরী, নবম বর্ষে রােহিণী এবং দশম বর্ষে কন্যা এবং তৎপর রজস্বলা সংজ্ঞা হইয়া থাকে।  ।।১।।
    যদি দশম বর্ষ পৰ্য্যন্ত বিবাহ না দিয়া রজস্বলা কন্যাকে তাহার মাতা, পিতা ও জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা দেখেন ( অর্থৎ, তার আর বিবাহ হইবে না ), তবে তাহারা তিন জনেই নরকে পতিত হন। ।।২।।

    বৈদিক -
    ব্রহ্মোবাচ— 
    একক্ষণা ভবেদ্‌ গৌরী দ্বিক্ষণেয়ন্তু রােহিণী। 
    ত্ৰিক্ষণা সা ভবেৎ কন্যা হ্যত উৰ্দ্ধং রজস্বলা॥১॥ 
    মাতা পিতা তথা ভ্রাতা মাতুলাে ভগিনী স্বকা। 
    সর্বে তে নরকং য়ান্তি দৃষ্টা কন্যাং রজস্বলাম্‌ ৷। ২৷৷

    ইহা সদ্যোনিৰ্মিত ব্রহ্মপুরাণের বচন।
    অর্থঃ যতটা সময়ের মধ্যে পরমাণু একবার আবর্তিত হয়, ততটা সময়কে ক্ষণ বলে। কন্যা জন্মের প্রথম ক্ষণে গৌরী, দ্বিতীয় ক্ষণে রােহিণী, তৃতীয় ক্ষণে কন্যা এবং চতুর্থ ক্ষণে রজস্বলা হইয়া থাকে৷৷১৷৷ সেই রজস্বলাকে দেখিয়া তাহার মাতা, পিতা, ভ্রাতা, মাতুল এবং সহােদরা ভগ্নী, সকলেই নরকে গমন করেন। ।।২।।

    বাল্যবিবাহ সমর্থক –   এই শ্লোকগুলি প্রমাণ নহে।

    বৈদিক - কেন প্রমাণ নহে? যদি ব্রহ্মর শ্লোক প্রমাণ নহে, তবে তােমার শ্লোকও প্রমাণ হইতে পারে না।

    বাল্যবিবাহ সমর্থক– বাঃ বাঃ! পরাশর এবং কাশীনাথের প্রমাণও মানিবেন না?

    বৈদিক - বাঃ বাঃ! তুমি কি ব্রহ্মার প্রমাণও মানিবে না! পরাশর এবং কাশীনাথ অপেক্ষা ব্ৰহ্মা কি শ্রেষ্ঠ নহেন? যদি তুমি ব্রহ্মার শ্লোকগুলি না মান তবে আমি কাশীনাথ এবং পরাশরের শ্লোকগুলি মানি না।

    বাল্যবিবাহ সমর্থক– তােমার শ্লোকগুলি অসম্ভব বলিয়া প্রমাণ নহে। কারণ, সহস্র ক্ষণ তাে জন্মকালেই কাটিয়া যায়, তবে বিবাহ কীরূপে হইতে পারে? আর ঐ সময়ে বিবাহের কোনও ফলও দেখা যায় না।

    বৈদিক - যদি আমার শ্লোকগুলি অসম্ভব হয়, তবে তােমার শ্লোকগুলিও অসম্ভব। কারণ, আট, নয় এবং দশ বৎসরে বিবাহ নিষ্ফল। কন্যার ষােড়শ বৎসরের পর চতুর্বিংশতি বর্ষ পৰ্য্যন্ত বয়সের মধ্যে বিবাহ হইলে পুরুষের বীর্য্য পরিপক্ক ও শরীর বলিষ্ঠ হওয়ায় এবং স্ত্রীর গর্ভাশয় পূর্ণ ও শরীর সবল হওয়ায় সন্তান উত্তম হইয়া থাকে। (প্রমাণ পরে দেওয়া হয়েছ)

    অষ্টম বর্ষীয়া কন্যার সন্তান হওয়া যেরূপ অসম্ভব, গৌরী এবং রােহিণী প্রভৃতি নাম দেওয়াও সেইরূপ অযৌক্তিক। যদি কন্যা গৌরবর্ণা না হয়, কিন্তু কৃষ্ণবর্ণা হয়, তবে তাহার নাম গৌরী রাখা বৃথা। গৌরী মহাদেবের স্ত্রী এবং রােহিণী ছিলেন বসুদেবের স্ত্রী। তােমরা পৌরণিকেরা তাহাকে মাতৃতুল্য মনে কর। যখন কন্যা মাত্রেই গৌরী প্রভৃতি ভাবনা করিতেছ, তখন আবার তাহাদিগকে বিবাহ করা কীরূপে ধর্মসঙ্গত এবং সম্ভবপর হইতে পারে। সুতরাং তােমাদের ও আমাদের দুই শ্লোকই মিথ্যা। যেরূপ আমি ব্রহ্মোবাচ বলিয়া শ্লোক রচনা করিয়াছি, সেইরূপ পরাশরাদির নামে তাহারাও শ্লোক রচনা করিয়াছে। অতএব এই সকল প্রমাণ পরিত্যাগ করিয়া | বেদ প্রমাণ অনুসারে সকল কর্ম করিতে থাক।


    ##################################

     সমঞ্জন্তু বিশ্বে দেবাঃ সমাপো হৃদয়ানি নৌ।
    সং মাতরিশ্বা সাংধাতা সমু দেষ্ট্রো  দধাতু নৌ ॥ 

    পদার্থঃ (বিশ্ব দেবাঃ) সমস্ত বিদ্বান্গ‌ণ! (সমঞ্জন্তু) নিশ্চিত রূপে জানুন (নৌ) আমাদের স্বামী স্ত্রী উভয়ের (হৃদয়ানি) হৃদয় (পঃ) জলের ন্যায় (সম্) মিলিত (মাতরিশ্বা) প্রাণবায়ু প্রিয় (সম্‌) প্রসন্ন (ধাতা) পরমাত্মা (সম্) মিলিত (সমুদ্রেষ্টো) উপদেষ্টা (নৌ) আমরা উভয় (দধাতু) ধারণ করি। (ঋগ্বেদ ১০/৮৫/৪৭)

    বঙ্গানুবাদঃ হে বিদ্বানুগণ! আপনারা জানিয়া রাখুন,আমাদের স্বামী স্ত্রী উভয়ের হৃদয় জলের ন্যায় পরস্পর মিলিত থাকিবে। যেমন প্রাণবায়ু আমাদের নিকট প্রিয়, পরমাত্মা যেমন সকলের প্রিয়, উপদেষ্টা যেমন শ্রোতাদের নিকট প্রিয় আমাদের একের আত্মা অন্যের প্রতি সেইরূপ প্রিয় হইবে।

    **৮/১০ বছরে কন্যা আত্মা পরমাত্মার কি বুঝিবে? কিভাবে এতো ছোট বয়সের কন্যার হৃদয় স্বামীর হৃদয়ের সাথে মিলিত থাকবে? তার কি এতকিছু বোঝার বয়স হয়েছে?

    ##################################

    অহং কেতুরহং মুর্ধাহহমুগ্রা বিবাচনী।
    মমেদনু ক্রতুং পতিঃ সেহানায়া উপাচরেৎ ॥ 

    পদার্থঃ (অহং কেতুঃ) আমি জ্ঞানবতী (অহং মূর্ধা) আমি শ্রেষ্ঠ (অহং! উগ্রা বিবাচনী) আমি ধৈর্য শালিনী বক্তৃতা কারিণী (সেহানায়াঃ) শত্রু নাশিনী (পতিঃ) স্বামী (মম) আমার (অনু) অনুকূল থাকিয়া (ক্রতুং উপাচরেৎ) গৃহ কর্ম সম্পাদন করুন। (ঋগ্বেদ ১০/১৫৯/২)

    বঙ্গানুবাদঃ আমি জ্ঞানবতী, গৃহে মুখ্য স্থানীয়া ধৈর্য শালিনী, বক্তৃতাকারিণী ও শত্রুনাশিনী। আমার পতি আমার অনুকুলে থাকিয়া গৃহকৰ্ম্ম সম্পাদন করুন।

    **৮/১০ বছরে কন্যা কিভাবে জ্ঞানবতী, গৃহে মুখ্য স্থানীয়া ধৈর্য শালিনী, বক্তৃতাকারিণী ও শত্রুনাশিনী হবে? 


    ##################################

    যথা সিন্ধুৰ্ণদীনাং সাম্রাজ্যং সুষুবে বৃষা।
    এবা ত্বং সম্রাজ্ঞেধি পত্যুরস্তং পরেত্য ।।

    পদার্থঃ (যথা) যেমন (বৃষা সিন্ধুঃ) বলবান সমুদ্র (নদীনাং সাম্রাজ্যম্‌) নদীসমূহের সাম্রাজ্য (সুষুবে) উৎপন্ন করিয়াছে (এব) তেমন তুমি (পত্যুঃ অন্তং পরা ইত্য) পতিগৃহে। গিয়া (ত্বং সাম্রাজ্ঞী এধি) সম্রাজ্ঞী হইয়া থাক। (অথৰ্ব্ববেদ ১৪/১/৪৩)

    বঙ্গানুবাদঃ হে বধূ! যেমন বলবান সমুদ্র নদী সমূহের উপর সাম্রাজ্য স্থাপন করিয়াছে তুমিও তেমন পতিগৃহে গিয়া সম্রাজ্ঞী হইয়া থাক।

    ** বাল্যবিবাহ হলে কি কন্যারা সম্রাজ্ঞী হতে পারবে? নাকি আজ্ঞাবহ দাসীতে পরিণত হবে?

    ##################################

    শুরুতেই আমি দেখিয়েছি নারী ও শিশুর পুষ্টির উপর বেদ কেমন গুরুত্ত্ব দিয়েছে। এখন দেখে নিন প্লাস্টিক সার্জারির জনক ও প্রাচীন ভারতের শ্রেষ্ঠ শরীরতত্ত্ববীদ মহর্ষি সুশ্রুত তার "সুশ্রুত সংহিতায়" কি বলেছেনঃ

    উপযুক্ত সময় অপেক্ষা নূন বয়স্ক স্ত্রী পুরুষদের গর্ভাধান সম্বন্ধে মুনিবর ধন্বন্তরি সুশ্রুতে নিষেধ করিয়াছেন:

    ঊনঘােডশ বর্ষায়াম প্রাপ্ত: পঞ্চবিংশতিম্‌,
    য়দ্যাধত্তে পুমান গর্ভং কুক্ষিস্থ: স বিপদ্যতে ।।১।।
    জাত বা ন চিরঞ্জীবের জীবেদ্বা দুৰ্ব্বলেন্দ্রিয় । 
    তস্‌মাদত্যন্তবালায়ং গর্ভাধানং ন কারয়েৎ ॥ ২॥ [ সুশ্রুত শরীরস্থান অ:১০। শ্লোক। ৫৭/৫৮]

    অর্থ—ষােল বৎসরের নূন বয়স্কা স্ত্রীতে পঁচিশ বৎসরের নূন বয়স্ক পুরুষ গর্ভাধান করিলে সেই কুক্ষিস্থ গর্ভ বিপন্ন হয় অর্থাৎ পূর্ণকাল পর্যন্ত গর্ভাশয়ে থাকিয়া উৎপন্ন হয় না ৷৷১ ॥

    অথবা উৎপন্ন হইলে ও দীর্ঘকাল পর্যন্ত থাকে না; জীবিত থাকিলেও দুৰ্ব্বলেন্দ্রিয় হয়। এই জন্য অতি অল্প বয়স্কা স্ত্রীতে গর্ভ-স্থাপন করিবে না ॥২॥

    ঈদৃশ শাস্ত্রোক্ত নিয়ম ও সৃষ্টিক্রম দেখিলে ও বুদ্ধির সহিত বিচার করিলে ইহাই সিদ্ধ হয় যে, ১৬ বৎসরের কম বয়স্কা স্ত্রী এবং ২৫ বৎসরের কম বয়স্ক পুরুষ কখনও গর্ভাধানের উপযুক্ত নহে। যাহারা এই সকল নিয়মের বিপরীত আচরণ করে, তাহাদের দু:খভাগী হইতে হয়।

    ##################################

    এবার বেদ থেকে বাল্যবিবাহে স্পষ্ট নিষেধ দেখে নিনঃ

    য়ুবা সুবাসাঃ পরিবীত আগাৎ স উ শ্রেয়ান্‌ ভবতি জায়মানঃ। 
    তং ধীরাসঃ কবয় উন্নয়ন্তি স্বাধ্যো৩ মনসা দেবয়ন্তঃ ।। (ঋ০ ৩/৮/৪)

    পদার্থঃ যে ব্যক্তি (পরিবীতঃ) সর্বতােভাবে যজ্ঞােপবীত ধারণ ও ব্রহ্মচর্য সেবন দ্বারা বিদ্বান্ এবং সু শিক্ষিত হইয়া, (সুবাসাঃ) সুন্দর বস্ত্র পরিধান পূর্বক, ব্রহ্মচর্য্যযুক্ত (য়ুবা) পূর্ণ যৌবন প্রাপ্ত হইয়া, বিদ্যাগ্রহণ করিয়া গৃহাশ্রমে (আগাৎ) প্রবেশ করেন, (স,উ) তিনিই দ্বিতীয় বিদ্যাজন্মে (জায়মানঃ) প্রসিদ্ধি লাভ করিয়া (শ্রেয়া) অতিশয় শােভাযুক্ত ও মঙ্গলকারী (ভবতি) হন। (স্বাধ্যঃ) উত্তম ধ্যানযুক্ত (মনসা) বিজ্ঞান দ্বারা বিদ্বানেরা (তম্‌) সেই পুরুষকে (উন্নয়ন্তি) উন্নতিশীল করিয়া প্রতিষ্ঠিত করেন।

    বঙ্গানুবাদঃ যে ব্যক্তি সর্বতােভাবে যজ্ঞােপবীত ধারণ ও ব্রহ্মচর্য সেবন দ্বারা বিদ্বান্ এবং সু শিক্ষিত হইয়া, সুন্দর বস্ত্র পরিধান পূর্বক, ব্রহ্মচর্য্যযুক্ত পূর্ণ যৌবন প্রাপ্ত হইয়া, বিদ্যাগ্রহণ করিয়া গৃহাশ্রমে  প্রবেশ করেন, তিনিই দ্বিতীয় বিদ্যাজন্মে প্রসিদ্ধি লাভ করিয়া অতিশয় শােভাযুক্ত ও মঙ্গলকারী হন।  উত্তম ধ্যানযুক্ত বিজ্ঞান দ্বারা বিদ্বানেরা সেই পুরুষকে উন্নতিশীল করিয়া প্রতিষ্ঠিত করেন।

    সুতরাং, যে স্ত্রী পুরুষ,ব্রহ্মচর্য্য ধারণ, বিদ্যা এবং সুশিক্ষা গ্রহণ না করিয়া বাল্যাবস্থায় বিবাহ করে তাহারা নষ্টভ্রষ্ট হইয়া বিদ্বান্ ব্যাক্তিদের মধ্যে সম্মান লাভ করেনা ।

    ##################################

    আ ধেনবাে ধুনয়ন্তামশিশ্বীঃ সবর্দুৰ্ঘাঃ শশয়া অপ্রদুগ্ধাঃ। 
    নব্যানব্যা য়ুবতয়াে ভবন্তীমহদ্দেবানামসুরত্বমেক৷৷  (ঋ ০৩/৫৫/১৬) 


    পদার্থঃ (অপ্রদুগ্ধাঃ) যে সকল গাভীর দুগ্ধ দোহন করা হয় নাই, সেই (ধেনবঃ) সকল গাভীর ন্যায় (অশিশ্বীঃ)। যাঁহাদের বাল্যাবস্থা অতিক্রান্ত হইয়াছে, (শবদুর্ঘাঃ) যাহারা সকল প্রকার সদাচার পালন করেন এবং (শশয়াঃ) যাঁহারা কুমারী অবস্থা অতিক্রম করিয়াছেন, (নব্যা নব্যাঃ) নব নব শিক্ষা ও অবস্থায় পরিপূর্ণ (ভবন্তী) হইয়াছেন (য়ুবতয়ঃ) সেই পূর্ণযৌবনা স্ত্রীসকল (দেবানাম্‌) ব্রহ্মচর্য্যের সুনিয়মে পূর্ণতাপ্রাপ্ত বিদ্বানদের (একম্‌) অদ্বিতীয়, (মহৎ) মহান্ (অসুরত্ব) প্রজ্ঞা শাস্ত্র শিক্ষাযুক্ত ও প্রজায় আনন্দভােগের তত্ত্ব প্রাপ্ত হইয়া তরুণ পতি লাভ করিয়া (আধুনয়ন্তা) গর্ভধারণ করিবেন।

    বঙ্গানুবাদঃ যে সকল গাভীর দুগ্ধ দোহন করা হয় নাই, সেই সকল গাভীর ন্যায় যাঁহাদের বাল্যাবস্থা অতিক্রান্ত হইয়াছে, যাহারা সকল প্রকার সদাচার পালন করেন এবং যাঁহারা কুমারী অবস্থা অতিক্রম করিয়াছেন,  নব নব শিক্ষা ও অবস্থায় পরিপূর্ণ হইয়াছেন সেই পূর্ণযৌবনা স্ত্রীসকল ব্রহ্মচর্য্যের সুনিয়মে পূর্ণতাপ্রাপ্ত বিদ্বানদের অদ্বিতীয়, মহান্ প্রজ্ঞা শাস্ত্র শিক্ষাযুক্ত ও প্রজায় আনন্দভােগের তত্ত্ব প্রাপ্ত হইয়া তরুণ পতি লাভ করিয়া গর্ভধারণ করিবেন।

    ##################################

    পূর্বীরহং শরদঃ শশ্ৰমাণা দোষা বস্তোরুষসো জরয়ন্তীঃ। 
    মিনাতি  শ্রিয়ং জরিমা তনূনামপ্যূ নু পত্নীর্বৃষণো জগম্যুঃ ৷৷   (ঋ০ ১/১৭৯/১ )


    পদার্থঃ  যাহাতে (নু) শীঘ্র (শশ্ৰমাণাঃ) অত্যন্ত পরিশ্রমী (বৃষণঃ) বীৰ্য্যসিঞ্চনে সমর্থ ও পূর্ণযৌবন সম্পন্ন পুরুষ (পত্নীঃ) যুবতী প্রাণপ্রিয় স্ত্রী (জগমঃ) লাভ করিয়া পূর্ণ শতবর্ষ বা ততােধিক আয়ু আনন্দের সহিত ভােগ করিতে এবং পুত্র পৌত্রাদির সহিত মিলিত থাকিতে পারে স্ত্রী-পুরুষ সর্বদা এইরূপ আচরণ করিবে। যেহেতু (পূর্বীঃ) পূর্ববর্তী (শারদঃ) শরদ ঋতু সকল এবং (জরয়ন্তীঃ) বার্ধক্য আনয়নকারী (উষসঃ) উষাকাল, (দোষাঃ) রাত্রি এবং (বস্তোঃ)দিন (তনুনাম্‌) শরীরের (শ্রিয়ং) শােভাকে, বল এবং সৌন্দর্যকে (জরিমা) দূরীভূত করিয়া অতিশয় বার্ধক্য আনয়ন করে, (অহম্‌) আমি, স্ত্রী বা পুরুষ, (উ) উত্তমরূপে (অপি) নিশ্চয় করিয়া, ব্রহ্মচর্য দ্বারা বিদ্যা, সুশিক্ষা, শারীরিক ও আত্মিক বল এবং যৌবন প্রাপ্ত হইয়া বিবাহ করিব। 



    বঙ্গানুবাদঃ যাহাতে শীঘ্র অত্যন্ত পরিশ্রমী বীৰ্য্যসিঞ্চনে সমর্থ ও পূর্ণযৌবন সম্পন্ন পুরুষ যুবতী প্রাণপ্রিয় স্ত্রী লাভ করিয়া পূর্ণ শতবর্ষ বা ততােধিক আয়ু আনন্দের সহিত ভােগ করিতে এবং পুত্র পৌত্রাদির সহিত মিলিত থাকিতে পারে স্ত্রী-পুরুষ সর্বদা এইরূপ আচরণ করিবে। যেহেতু পূর্ববর্তী শরদ ঋতু সকল এবং  বার্ধক্য আনয়নকারী উষাকাল, রাত্রি এবং দিন শরীরের শােভাকে, বল এবং সৌন্দর্যকে দূরীভূত করিয়া অতিশয় বার্ধক্য আনয়ন করে, আমি, স্ত্রী বা পুরুষ, উত্তমরূপে নিশ্চয় করিয়া, ব্রহ্মচর্য দ্বারা বিদ্যা, সুশিক্ষা, শারীরিক ও আত্মিক বল এবং যৌবন প্রাপ্ত হইয়া বিবাহ করিব। 

    ##################################

    তমস্মেরা য়ুবতয়াে  য়ুবানং মর্মৃজ্যমানাঃ পরিয়ন্ত্যাপঃ। 
    স শুক্রেভিঃ শিক্বভী রেবদস্মে দীদায়ানিমাে ঘৃতনির্নিগপ্সু।। (ঋ০মং০২। সু০৩৫। মং০ ৪)

    যে সব (মর্মৃজ্যমানাঃ) উত্তম ব্রহ্মচর্য ব্রত ও সদ্বিদ্যায় অত্যন্ত শুদ্ধা (যুবতয়ঃ) ২০ (কুড়ি) বর্ষ হইতে ২৪ (চব্বিশ) বর্ষ বয়সের যুবতী কন্যা, যেরূপ (আপঃ) জল বা নদী সমুদ্রকে প্রাপ্ত হয়, সেইরূপ (অস্মেরাঃ) আমাদিগকে প্রাপ্ত হইয়া, নিজেদের হইতে দেড় গুণ বা দুই গুণ বয়সের (তম্‌) সেই ব্রহ্মচর্য্য ও বিদ্যায় পরিপূর্ণ, শুভলক্ষণযুক্ত, আপন-আপন মনের মত (যুবান) যুবা পতি (পরিয়ন্তি) প্রাপ্ত হয়। (সঃ) সেই ব্রহ্মচারী (শুক্রেভিঃ) শুদ্ধ গুণ ও (শিক্কভিঃ) বীৰ্য্যাদি হইয়া (অস্মে) আমাদের মধ্যে (রেবৎ) অত্যন্ত শ্রীসম্পন্ন কর্ম ও (দীদায়) স্বীয় যােগ্যা যুবতী স্ত্রী প্রাপ্ত হউক। (অপ্সু) অন্তরিক্ষে বা সমুদ্রমধ্যে (ঘৃতনিৰ্ণিক্‌) জলের শােধক (অনিঋ) স্বয়ং প্রকাশিত বিদ্যুৎ অগ্নির ন্যায় স্ত্রী ও পুরুষের হৃদয়ের প্রেম অন্তরে প্রকাশিত ও বাহিরে অপ্রকাশিত থাকুক, এইভাবে স্ত্রী ও পুরুষ উভয়ে গৃহাশ্রমে উত্তম সন্তান ও গভীর আনন্দ লাভ করুক। 

    ##################################

    অস্মৈ তিস্রো অব্যথ্যায় নারীর্দেবায় দেবীর্দিধিষন্ত্যন্নম্‌। 
    কৃতাইবােপ হি প্রসর্স্রে আপ্‌সু স পীযূষং ধয়তি পূর্বসূনাম্।। (ঋ০মং০২। সু০৩৫। মং০ ৫)


    হে স্ত্রীপুরুষগণ! (তিস্রঃ) উত্তম, মধ্যম ও অধম (দেবীঃ নারীঃ) বিদ্বান ব্যক্তিদের বিদুষী স্ত্রীরা (অস্মৈ) এই (অব্যথ্যায়) পীড়ারহিত (দেবায়) কামনার জন্য (অন্নম্‌) অন্নাদি উত্তম পদার্থ (দিধিষন্তি) ধারণ করে। (কৃতা ইব) যেন শিক্ষা লাভ করা হইয়াছে এইরূপ (অপ্সু) প্রাণবৎ প্রীত্যাদি ব্যবহারে প্রবৃত্ত হওয়ার জন্য স্ত্রীগণের সহিত পুরুষগণ এবং পুরুষগণের সহিত স্ত্রীগণ (উপ প্রসর্স্রে ) সম্বন্ধ প্রাপ্ত হয়, (সঃ হি) সেই স্ত্রী ও পুরুষই আনন্দ লাভ করে। জলে (পীযুষম্‌) অমৃতরূপ রস প্রাপ্ত হওয়ার ন্যায় (পূর্বসূনাম্‌) প্রথমপ্রসুতা স্ত্রীদের সন্তান (ধয়তি) যেরূপ দুগ্ধ পান করিয়া পুষ্ট হইতে থাকে, সেইরূপ এই ব্রহ্মচারী ও ব্রহ্মচারিণী স্ত্রীর সন্তান যথাবৎ পুষ্টি লাভ করিতে থাকে।


    ##################################

    অশ্বস্যা জনিমাস্য চ স্বর্দ্রুহাে রিষঃ সম্পৃচঃ পাহি সূরীন্‌। 
    আমাসু পূর্ষু  পরো অপমৃষ্যং নারাতয়াে বি নশন্নানৃতানি।। (ঋ০মং০২। সু০৩৫। মং০ ৬)

    যেমন রাজপুরুষেরা (পূর্ষ) নিজেদের নগরে ও (আসাসু) গৃহে উৎপন্ন পুত্র ও কন্যারূপ প্রজাদের মধ্যে সুশিক্ষা প্রাপ্ত হয়, যেমন (পরঃ) উত্তম বিদ্বান্ (অপ্রমৃষ্যম্‌) শত্রুদের অসহনীয় ব্রহ্মচর্য্যলব্ধ বলবান দেহ প্রাপ্ত হয়, (অরাতয়ঃ) শত্রুগণ (ন বিনশন্‌) যাহাকেবিনাশ করিতে পারেনা ও (অনৃতানি) মিথ্যা বাক্যাদি দুষ্ট দুৰ্বসন যাহাকে (ন) প্রাপ্ত হয় না এমন উত্তম স্ত্রীপুরুষ (দ্রুহেঃ ) দ্ৰোহাদি দুর্গণ ও (রিষঃ) হিংসাদি পাপের (ন সম্পৃচঃ) সম্বন্ধ প্রাপ্ত হয় না। যে যুবাবস্থায় বিবাহ করিয়া সানন্দে যথাবিধি সন্তানােৎপাদন করে, তাহারা (অস্য) এই (অশ্বস্য) মহান্ গৃহাশ্রমের মধ্যে উত্তম সন্তান সমূহের (জনিম) জন্ম হয়। অতএব হে স্ত্রী ও পুরুষ তুমি (সূরীন্‌) বিদ্বাদিগকে (পাহি) রক্ষা করাে (চ) এবং এইরূপে গৃহস্থগণের (অত্র) এই গৃহাশ্রমে সর্বদাই (স্বঃ) সুখ বৃদ্ধি পাইতে থাকে।


    ##################################

    বধূরিয়ং পতিমিচ্ছন্ত্যেতি য় ঈং বহাতে মহিষীমিষিরাম্‌। 
    আস্য শ্ৰবস্যাদ্রথ আ চ ঘােষাৎপুরী সহস্রা পরি বর্ত্তয়াতে।। ( ঋ০মং০৫। সু০ ৩৭। মং০৩)

    হে মনুষ্যগণ। (য়ঃ) পুর্বলক্ষণাক্রান্ত যে পুর্ণযুবক (ঈম্‌) সর্ব প্রকারে পরীক্ষা করিয়া (মহিষীম্‌) সদ্ বংশােৎপন্না, শুভগুণরূপবিদ্যা ও চরিত্রসম্পন্ন (ইষিরাম্‌) বরের কামনাকারিণী ও প্রিয়হৃদয়া স্ত্রী প্রাপ্ত হয় এবং (পাতি্‌) বিবাহদ্বারা নিজ স্বামীর (ইচ্ছন্তী) অভিলাষিণী যে (ইয়ম্‌) এই (বধূঃ) স্ত্রী নিজের যােগ্য প্রিয়হৃদয় পতি (এতি) প্রাপ্ত হয়, সেই পুরুষ বা স্ত্রী (অস্য) এই গৃহাশ্রমের মধ্যে (আশ্রবস্যাৎ) সর্বতােপ্রকারে গভীর বিদ্যা ও ধনধান্যযুক্ত হউক এবং তাহারা উভয়ে (রহঃ) রথের ন্যায় (আঘােষৎ) পরস্পর প্রিয়বাক্য বলুক (চ) এবং সব গৃহাশ্রমের ভার (বহাতে) বহন করিতে থাকুক। তাহারা উভয়ে (পুরূ) বহু (সহস্রা) অসংখ্য সৎ কাৰ্য্য সিদ্ধ করিতে পারে।



    ##################################

    উপ ব এষে বন্দ্যেভিঃ শূষৈঃ প্র য়হ্বী দিবশ্চিতয়রির্কৈঃ। 
    উষাসানক্তা বিদুষীব বিশ্বমা হা বহতাে মর্ত্যায়  যজ্ঞম্‌।। ( ঋ০মং০৫। সু০৪১। মং০৭)

    অর্থঃ হে মনুষ্যগণ। যদি তােমরা পূর্ণ ব্রহ্মচৰ্য্যদ্বারা স্ব স্ব সন্তানকে সুশিক্ষিত করিয়া স্বয়ম্বর বিবাহ করাও, তবে তাহারা (বন্দ্যেভিঃ) কামনার যােগ্য, (চিত্তয়দ্ভিঃ) সব সত্যবিদ্যার জ্ঞাতা (অর্কৈঃ) সম্মানযােগ্য, (শূষৈঃ) শারীরিক ও আত্মিক বলে বলীয়ান হইয়া (বঃ) তােমাদের জন্য (এষে) সর্ব সুখ লাভে সমর্থ হইবে এবং (উষাসানক্তা) দিন ও রাত্রির ন্যায় সেই (বিদুষীব) বিদুষী স্ত্রী ও বিদ্বান্ পুরুষ (বিশ্বম্‌) গৃহাশ্রমের সম্পূর্ণ ব্যবহার (আবহতঃ) সর্ব দিক হইতে প্রাপ্ত হয়। (হ) এইরূপে এই (যজ্ঞম্‌) সংগতিযুক্ত গৃহাশ্রমের ব্যবহারকে সেই স্ত্রীপুরুষ পূর্ণ করিতে পারে। (মর্ত্যায়) মনুষ্যগণের জন্য এই পুর্বক্তো বিবাহ পূর্ণ সুখদায়ক হয় এবং (য়হ্বী) অত্যন্ত শুভগুণকর্মস্বভাবযুক্ত স্ত্রীপুরুষ উভয়েই (দিবঃ) কামনাকে (উপ প্র বহতঃ) উত্তমরূপে প্রাপ্ত হইতে পারে, অন্যে নহে।

    যেমন ব্রহ্মচর্য বিষয়ে কন্যার ব্রহ্মচর্য্য বেদোক্ত, সেইরূপ সব পুরুষ ব্রহ্মচর্য্য ধারণপূর্বক বিদ্যালাভ করিয়া পূর্ণ যুবক হইবে। পরস্পরকে পরীক্ষা করিয়া যাহাকে যাহার বিবাহ করিলে পর্ণ প্রীতি হইতে পারে, তাহার সহিত তাহার বিবাহ হওয়াই অত্যুত্তম বিবাহ।


    ইতি, শাস্ত্রমতে কন্যার নূন্যতম ১৬ বছর এবং পুরুষের নূন্যতম ২৫ বছরে বিবাহের বিধান প্রমানিত করা হলো।