• সর্বশেষঃ

    পূরাণের কৃষ্ণ পর্ব - ৩


    বিষ্ণুর নিবাস-স্থান
    এই পৃথিবীর ষোল কোটি যোজন উপরে আকাশে বিষ্ণুলোক যেখানে বিষ্ণু ও তাঁর পত্নী লক্ষ্মী নিবাস করেন। (সংক্ষিপ্ত স্কন্দ পুরাণ পৃষ্ঠা ৫৭৯ গীতা প্রেস)। এর দ্বারা জানা যায় যে, এই দেবতাও আমাদের জন্য সর্বদা বিদেশী, যারা এখান থেকে ষোল কোটি যোজন অর্থাৎ ৬৪ কোটি ক্রোশ অর্থাৎ ১ অর্বুদ ২৮ কোটি মাইল উপরে কোথাও আকাশে নিবাস করে। দুঃখ হয় যে, ভারতের হিন্দুদের মস্তিষ্কও বিদেশীদের গোলামিতে আবদ্ধ, তাদের সর্বব্যাপক পরমাত্মার উপর কখনও বিশ্বাস ছিল না। আমাদের দেশ বিদেশী গোলামি থেকে স্বাধীন হয়েছে। যদি এখানকার লোকেদের মস্তিষ্কও বিদেশী দেবতাদের গোলামি থেকে মুক্ত হয়ে যায় এবং বিষ্ণুও শিব মন্দির যা বিদেশীদের বৌদ্ধিক দাসত্বের দেশে অপমানজনক চিহ্ন, ধ্বংস হয়ে যায় তাহলে দেশ বাস্তবিক পক্ষে স্বাধীন হয়ে যাবে।
    শ্রীকৃষ্ণ সম্বন্ধে পুরাণের গোলোকের একটা ঘটনা লিখিত আছে এবং বলা হয়েছে যে, তাঁর অবতার রূপ নেওয়ার কারণও লোক কল্যাণ ছিল না। এক দিন গোলোকে রাধিকা তাঁকে কোন নারীর সহিত দুষ্কর্ম করতে ধরে ফেলে, তখন রাধা অভিশাপ দিলেন। তিনি বললেন -


    কৃষ্ণের প্রতি রাধার শাপঃ
    হে কৃষ্ণ বৃজকান্ত! গচ্ছ মহৎপুরতো হরে।
    কথং দুনোষিমাং লোলং রতি চৌর অতি লম্পট।।৫৮।। ময়াজ্ঞাতো অসি ভদ্র তে গচ্ছ-গচ্ছ মমাশ্ৰমাৎ।।৬০।। শাশ্বতে মনুষ্যাণাং চ ব্যবহারস্য লম্পট।
    লভতাং মানুষী য়ৌনি গোলাকাদ্ ব্রজ ভারতম্।।৬১।।
    হে সুশীলে, হে শশিকলে, হে পদ্মাবতী মাধবী।
    নিবার্য় তাচ্চধুর্তো য় কিমস্যাত্র প্রয়োজনম্।।৬২।।
                              (ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ কৃষ্ণ জন্ম খন্ড অ0৩)
    অর্থাৎ হে কৃষ্ণ, ব্রজের প্রিয়, তুমি আমার সামনে থেকে চলে যাও, আমাকে কেন দুঃখ দিচ্ছ? - হে চঞ্চল, হে অতি লম্পট ফাঁকিবাজ আমি তোমাকে জেনে নিয়েছি। তুমি আমার ঘর থেকে চলে যাও। তুমি মনুষ্যের মতো মৈথুন করায় লম্পট, তুমি মনুষ্য যোনি প্রাপ্ত হও, তুমিগোলোক থেকে ভারত চলে যাও। হেসুশীলে, হেশশিকলে, হে পদ্মাবতি, হে মাধাবগণ! এই কৃষ্ণ ধূর্ত, একে বের করে দাও, এখানে এর কোন কাজ নেই।
    এই প্রকার কৃষ্ণের গোলোকের পত্নী রাধাকৃষ্ণের ব্যভিচার ধরে ফেলে এবং গোলোকবাসিনী স্ত্রীদের দ্বারা ধাক্কা দিয়ে সেখান থেকে বের করে দেন এবং ব্যভিচার কামনা পূর্ণ করার শাপ দিয়ে ভারতে জন্ম নিতে বলেন। এখানে এসেও এই পৌরাণিক মহাশয় সেই কুকর্ম করলেন যার জন্য ইনি এখানে এসেছিলেন।
    সনাতনীরা, দেখ তোমাদের ভগবানের চরিত্র !! এখনও কি রাধাকৃষ্ণ বুলি আওড়ালে তোমাদের মুক্তি হবে ? বুদ্ধি দিয়ে চিন্তা কর। এমন চরিত্রহীন ব্যাক্তি যে ভক্তের ঘরে যাবে সেখানে প্রথমেই সে ব্যভিচারের সামগ্রীই খুঁজবে। এই১১১নং-র তিলকধারী জাল পন্ডিতরা রমণ’ শব্দের অর্থ নিয়ে খুব চেঁচামেচি করেছেন। এইজন্য পরবর্তী প্রমাণগুলির অর্থ মনোযোগ সহকারে পাঠ করলে দেখতে পাবেন যে, রমণ শব্দের অর্থ বিষয় ভোগ বা অন্য কিছু ?
    কলিযুগী পন্ডিতদের রমণ করা সম্পর্কে নারদ বলছেন যে,
    পন্ডিতাস্তু কলত্রেণ রমতে মহিমা ইব।
    পুত্রস্যোৎপাদনে দক্ষা অদক্ষা মুক্তি সাধনে।। (মহাত্ম প্রকরণং ভাগবত অধ্যায় শ্লোক ৭৫)
    অর্থ- কলিযুগের পৌরাণিক পন্ডিতরা স্ত্রীদের সঙ্গে মেষের, সমান রমণ করেন। তারা কেবল পুত্র উৎপন্ন করতেই কুশল, ধর্ম-কর্মও মোক্ষ সাধন সম্পর্কে কিছুই জানেন না !
    মহিষ-মহিষী সহ যেমন মহিষীর গুপ্তাঙ্গের ঘ্রাণ নিয়ে এলোপাতাড়ি ভোগ করে ঠিক সেইরূপ মাধবাচার্যাদি সনাতনী পোপ পন্ডিত স্ত্রীদের সঙ্গে কেবল রমণ করতেই কুশল। এইসব শব্দ আমাদের অথব অন্য আর্যসমাজী দ্বারা বলা হয়নি। সনাতনী পন্ডিতদের উপরে নারদ মুনির বক্তব্য অবশ্যই সত্য হবে। এখানে রমণ অর্থ কেবল বিষয়ভোগ করা, এটা সুস্পষ্ট। তাই রমণ মোষের মতো করা হোক বা মহাদেব ও সতীর মতো, কিম্বা কৃষ্ণ ও কুজ্বার মতো।


    শিব ও সতীর রমণঃ
     রেমণে শেকে তমসোড়ু সতী শ্রান্তাভবত্তদা।
    উবাচ দীনয়াবাচা দেব দেব জগৎগুরুম্।।
    ভগবন্নাহি শক্লোতি তব ভারং সুদুঃসহম্।
    ক্ষমস্বামাং মহাদেবঃ কৃপাং কুরু জগৎপতে।।
    নিশম্য বচনং তাস্যা ভগবান বৃষভধ্বজেঃ।
    নিভরং রমণং চক্রে গাঢ় নিদয় মানসঃ।।
    কৃত্বা সম্পূর্ণ রমণং সতী চ ত্যক্ত মৈথুনা।
    উৎথানায় মনশ্চক্র উভয়ৌস্তেজঃ উত্তমম্।।
    পপাত ধরনী পৃষ্ঠে তৈ ব্যাপ্ত অখিলং জগৎ। 
    পাতালেভূতলে স্বর্গে চ শিবলিঙ্গাস্তদা ভবন্।।
                          (শব্দ কল্পদ্রুম কোষ ‘লিঙ্গ’ শব্দের ব্যাখ্যা)
    অর্থঃ- বিবাহের পরে একদিন শিব নব বধূ সতীর সঙ্গে ‘রমণ’ করতে লাগলেন। সতী ক্লান্ত হয়ে পড়েন, মহাদেবের ভার সইতে পারলেন না। অত্যন্ত দীনতাপূর্ণ ভাবে বললেন, “হে জগদ্গুরু!  আপনার দুঃসহ ভার আমি আর সইতে পারছিনা। আমাকে আপনি ক্ষমা করবেন। হেজগৎ পতে! আমার উপর দয়া করুন!” তখন




    মহাদেব এই শুনে অত্যন্ত নির্দয়তা সহ খুব মৈথুন (রমণ) করলেন। সম্পূর্ণ মৈথুন সমাপ্তির পরে ক্লান্ত সতী ওঠার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। তখন উভয়ের উত্তম বীর্য পথিবীর উপর পতিত হলো। বীর্যদ্বারা সমস্ত সংসার ব্যাপ্ত হয়ে গেল।সেই বীর্য হতে পৃথিবী, স্বগও পাতাল তিন লোকে যোনিগুলি সহ শিবলিঙ্গ সৃষ্ট হলো।
    মহাদেব কীরকম রমণ করলেন ? ‘রমণ’ শব্দের অর্থ পুরাণে যেখানে কৃষ্ণ, রাধাও গোপীদের সহ এসেছে সেখানে বিষয় ভোগই আর্থই হবে। যেখানে যোগী অথবা ভক্ত ও ঈশ্বরের সম্বন্ধ অর্থে প্রকাশ হয়, সেখানেভক্ত অথবা যোগীর ঈশ্বরের ধ্যানে তন্ময় (মগ্ন) হওয়ার অর্থে এসেছে। কিন্তু এই সব জ্ঞানান্ধ পাষণ্ডদের বোধে আসবে না, এদের মাথায় কেবল মিথ্যার্থ ভরা আছে, সত্যার্থ কী করে বুঝবে ? যারা কেবল মোষের মতো দিনরাত স্ত্রীদের সঙ্গে রমণ করাই জানে, এমন মেকি পন্ডিত আমাদের কাছে রমণ শব্দের অর্থ যদি জিজ্ঞাসা করে তাহলে এটা পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য হবে। পুরাণানুযায়ী ‘কামশাস্ত্র বিশেষজ্ঞ’ কৃষ্ণ গোপীদের সঙ্গে কীরকম রমণ করতেন তা পরিষ্কার করার জন্য ভাগবতকার লিখলেন - ‘রেমে রেমেশো ব্ৰজ সুন্দরীভিঃ' অর্থাৎ কৃষ্ণ সেইসব ব্রজ সুন্দরীদের সঙ্গে বিষয় ভোগ (রমণ) করতেন। গীতার কৃষ্ণ জীবনে কখনও ব্যভিচার করেননি। কিন্তু এই সব ভণ্ড পোপ পন্ডিতদের নিতান্ত আনন্দের বিষয় যে, নিষ্কলঙ্ক কৃষ্ণকে ব্যভিচারী বলা হোক এবং তার আড়ালে নিজেরা খুব দুষ্কর্ম করুক।

    কুজ্বা সহ কৃষ্ণের রমনঃ
     বিদ্রাঁচলেভে সা কুজ্বা নিদ্ৰেশোপি য়য়ৌ মদা।
    বোধয়া মাস তাং কৃষ্ণো ন দাসীশ্চাপি নিদ্রিতাঃ।।
    ত্যজ নিদ্রাং মহা ভাগে শৃঙ্গারং দেহি সুন্দরি।
    ইত্যুক্তবা শ্রীনিবাশ্চ কৃত্বা তামেব বক্ষসি।।
    নগ্নাং চ কার শৃঙ্গারং চুম্বনং চাপি কামুকীম্।
    সা সস্মিতা চ শ্রীকৃষ্ণ নব সঙ্গম লজ্জিতা।।
    চুবুম্ব গংড়ে ক্ৰীড়ে তাং চকার কমলাং য়থা।
    সুরতে বিরতিনস্তি দম্পতি রতি পন্ডিতৌ।।
    নানা প্রকার সুরতে বভূবতত্র নারদ।
    স্তন শ্রোণি যুগ্ম তস্যা বিক্ষতস্য চকারহঃ।। 
    ভগবান্নখৈস্তীছ্নৈঃ দশনৈরধরং বরম্।।
    নিশাবসান সময়ে বীর্য়াধ নং চকার সঃ।।
    সুখ সম্ভোগ ভোগেন মূৰ্ছামাপ চ সুন্দরী।
    ভগবানাপিতত্রৈব ক্ষণং স্থিত্বা স্বমন্দিরম্।।
    জগাম য়ত্র নন্দস্য সানন্দৌ নন্দ নন্দনঃ।
              (ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ কৃষ্ম জন্ম খণ্ড ৭২)
    অর্থ :- সেই কুজ্বা নিদ্রামগ্ন হলো এবং নিদ্ৰাপতি কৃষ্ণও সেখানে প্রসন্নচিত্তে গমন করল। শ্রীকৃষ্ণ কুজাকে জাগালেন। সুপ্ত দাসীদেরকে জাগালেন না। কৃষ্ণ বললেন-হে মহা ভাগ্যশালিনী! শৃঙ্গার দান কর।' এই বলে কৃষ্ণ কুজ্বাকে কোলে করে চুম্বন করলেন এবং সেই কামুকীকে উল্লঙ্গ করে ভোগ করতে লাগলেন। এই সমাগমে সে লজ্জিত হয়ে মৃদু হেসে কৃষ্ণকে নগ্ন করে চুম্বন করতে থাকে তখন কৃষ্ণ তার কপোল চুম্বন করে লক্ষ্মীর মতো কোলে বসালেন। কেননা উভয়ে কাম ভোগ করতে চতুর, এইজন্য কামভোগের অন্তই হচ্ছিল না। হে নারদ! সেখানে নানা প্রকারে কামভোগ করা হলো। ভগবান কৃষ্ণ তার স্তনকে নখ দ্বারা ক্ষতবিক্ষত করে দিলেন এবং দাঁত দিয়ে তার ওষ্ঠ কর্তন করলেন। সেই রাতে কৃষ্ণ অবশেষে শুক্ৰাধান করে দিলেন। সুখ সম্ভোগের ফলে সেই সুন্দরী মূর্চ্ছিত হয়ে গেল। ভগবান কৃষ্ণও সেখানে অল্পক্ষণ বিশ্রাম করে নিজ গৃহে প্রস্থান করলেন, যেখানে নন্দ সানন্দে অবস্থান করছিলেন।

    পাঠক লক্ষ্য করুন সনাতনী কৃষ্ণ অবতারের চরিত্র! পুরাণের কৃষ্ণের ব্যভিচারী শিরোমণি হওয়ায় এখনও কোন সন্দেহ ? ভণ্ড শিরোমণি গালাগাল শাস্ত্রী মাধবাচার্য এখন বলুন যে, কুজ্বার চিবুক ধরে তার কুঁজ বিলোপ করা হচ্ছে অথবা স্তন মর্দন করে বা তাকে নগ্ন করে ব্যভিচার করা হচ্ছে? ওহে নির্লজ্জ পোপেরা, যদি এখনও কিছু লাজ-শরম অবশিষ্ট থাকে তাহলে গোস্পদের জলে ডুবে মর। তোমরা মহাত্মা কৃষ্ণকে অত্যন্ত কলঙ্কিত করেছ।