• সর্বশেষঃ

    পাকিস্তানের জাতীয় সঙ্গীতের রচিয়তা হিন্দু কবি জগন্নাথ আজাদ।


    পাকিস্তানের প্রথম জাতীয় সঙ্গীত রচিয়তা এক ভারতীয় হিন্দু৷ জিন্নাহের অনুরোধেই বিশিষ্ট উর্দু কবি জগন্নাথ আজাদ লিখেছিলেন পাকিস্তানের প্রথম জাতীয় সঙ্গীত৷ এটি পরিচিত ‘তারানা এ পাকিস্তান’ নামে৷ পরে খোদ জাতির পিতার ইচ্ছেকে শিকেয় তুলে দেয় পাক সরকার৷ পরিবর্তন করা হয় জাতীয় সঙ্গীতের৷ খুব কুৎসিতভাবেই পাকিস্তানীরা তাদের জাতির পিতার জিন্নাহের মনোনিত জাতীয় সঙ্গীতকে বাদ দেন এক মাত্র হিন্দু কবির লেখা জাতীয় সঙ্গীত হওয়ার কারণে। 


    ইতিহাসকে মুছে দিতে চেয়েছে পাকিস্তান৷ পারেনি৷ তবে সে দেশের প্রথম জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা হিসেবে থেকে গিয়েছেন জগন্নাথ আজাদ৷ ১৯৫০ সালে পাক সরকার জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে ‘তারানা এ পাকিস্তান’-এর বদলে ‘কৌমি তরানা’-কে মর্যাদা দেয়৷

    ১৪ অগস্ট ১৯৪৭ সাল৷ ভারত ভেঙে পাকিস্তান তৈরি হল৷ বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে লর্ড মাউন্ট ব্যাটন ও লেডি ব্যাটন ও গভর্নর জেনারেল মহম্মদ আলী জিন্নাহের উপস্থিতিতে নবগঠিত রাষ্ট্রের প্রথম জাতীয় সঙ্গীত ‘তরানা এ পাকিস্তান’ গাওয়া হয়৷ সেই মুহূর্তে তৈরি হয় নজির৷ এক ভারতীয় নাগরিক হিন্দু জগন্নাথ আজাদের লেখা গান হয়ে গিয়েছিল পাক জাতীয় সঙ্গীত৷

    এই পাক জাতীয় সঙ্গীত ১৯৫০ সালে কেন পরিবর্তন করা হয়েছিল তার কোনও উত্তর মেলেনি৷ কবি জগন্নাথ আজাদ থেকে গিয়েছিলেন সবার অগোচরে৷ ২০০৪ সালে মৃত্যুর পর আচমকা তাঁর নাম আলোচনার উঠে আসে৷ এক সাংবাদিক দাবি করেন, পাকিস্তানের প্রথম জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা এক হিন্দু কবি৷ তাঁর নাম জগন্নাথ আজাদ৷ দেশভাগের আগে তিনি একসময় লাহোরে বসবাস করতেন৷ মহম্মদ আলি জিন্নার ঘনিষ্ঠ ছিলেন৷ জগন্নাথ আজাদের অবদান পাক ঐতিহাসিকরা স্বীকার করেন না৷ এটাই তার প্রমান।

    কবি জগন্নাথ আজাদের জন্ম ১৯১৮ সালে৷ যে গ্রামে তাঁর আদি বাড়ি সেটি দেশভাগের পর পাকিস্তানে পড়েছে৷ পাক পাঞ্জাব প্রদেশের এই গ্রামের নাম ইসা খেল৷ কিশোরকাল থেকেই উর্দু কবিতার প্রতি বিশেষ অনুরাগ ছিল জগন্নাথ আজাদের৷ লেখাপড়া প্রথমে রাওয়ালপিন্ডিতে পরে লাহোর ইউনিভার্সিটি এফ পাঞ্জাবে৷ লাহোরেই সাংবাদিকতা শুরু করেন জগন্নাথ আজাদ৷ দেশভাগের পর দিল্লিতে এসে উর্দু সংবাদ পত্রের সম্পাদক হন৷

    ১৯৪৮ সালে এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ পেপারের সম্পাদক হয়েছিল তিনি৷ তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের প্রথম জনসংযোগ আধিকারিক জগন্নাথ আজাদ৷ একই পদে ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে৷ এছাড়াও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন তিনি৷


    উর্দু দুনিয়ার শাহেনশা হিসেবে পরিচিত মহম্মদ ইকবালের জীবনাদর্শের অনুরক্ত জগন্নাথ আজাদের সঙ্গে মহম্মদ আলি জিন্নার সুসম্পর্ক ছিল৷ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৌভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক বজায় রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছিলেন৷ 

    পাকিস্তানের প্রথম জাতীয় সঙ্গীত(Video)